বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি এখন এনভিডিয়া
- আহমেদ ইফতেখার
- ২২ জুন ২০২৪, ০২:৪৭
১৯৯৩ সালে কম্পিউটার চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এনভিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন তাইওয়ানে জন্ম নেয়া প্রযুক্তিবিদ জেনসেন হুয়াং। পরবর্তীতে ভারী গ্রাফিক্স-নির্ভর ভিডিও গেমগুলোতে ব্যবহৃত চিপ তৈরির জন্য পরিচিত হয়ে ওঠে এনভিডিয়া। সম্প্রতি এআই ল্যাবরেটরি এবং এআই অ্যালগরিদম পরিচালনার জন্য একই চিপের ব্যবহার শুরু করেছেন গবেষকরা। এর ফলে এনভিডিয়ার চিপের চাহিদা যেমন বেড়ে গেছে, তেমনি কোম্পানিটির ওপর বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও বেড়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকেই বাজারমূল্যে অ্যাপলকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল এনভিডিয়া। আর গত মঙ্গলবার টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফটের চেয়েও দামি কোম্পানি হয়ে ওঠে তারা।
সম্প্রতি টেক জায়ান্ট অ্যাপলকে টপকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানির আসন দীর্ঘদিন পর ফেরত পেয়েছিল মাইক্রোসফট। তবে সে অবস্থানে নতুন নাম এনভিডিয়া, যার উত্থানের পেছনে কাজ করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জোয়ার। এই বছর সামগ্রিকভাবে এনভিডিয়ার শেয়ারমূল্য বেড়েছে ১৭০ শতাংশের বেশি, যেখানে চিপ প্রসেসর বাজারের ৮০ শতাংশ দখলে রেখে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতেও শীর্ষে অবস্থান করছে চিপ জায়ান্ট কোম্পানিটি।
সর্বশেষ উত্থানের পর এনভিডিয়ার বাজারমূল্য এখন তিন লাখ ৩২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার, যেখানে ফেব্রুয়ারিতে তাদের বাজারমূল্য দুই ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করেছিল। কোম্পানির এমন নাটকীয় উত্থানে প্রযুক্তি খাতেও একটি মাইলফলক অর্জিত হয়েছে, যে খাতে ২০০৭ সালে আইফোন উন্মোচনের পর থেকে রাজত্ব করে আসছিল অ্যাপল, আর তার পেছনেই ছিল মাইক্রোসফট। তবে, আইফোনের চাহিদা কমে আসার প্রভাব অ্যাপলের শেয়ারমূল্যে পড়ায় এ বছরের শুরুতেই মাইক্রোসফটের কাছে সিংহাসন হারিয়েছে কোম্পানিটি।
একই সময় চ্যাটজিপিটি নির্মাতা ওপেনএআইয়ের ওপর মাইক্রোসফটের বিনিয়োগও কোম্পানির শেয়ারমূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক ছিল, যার ফলে জেনারেটিভ এআই খাতেও প্রাথমিকভাবে এগিয়ে ছিল কোম্পানিটি।
চলতি মাসের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঘটে যাওয়া এক বিভাজনের পর এনভিডিয়ার শেয়ারের চাহিদা বেড়ে যায়। ফলে, কোম্পানিটি আরো শেয়ার তৈরি করে, যা বিভিন্ন বিনিয়োগকারীদের আরো আকৃষ্ট করেছে। ৭ জুনের এ বিভাজনের আগে এনভিডিয়ার একেকটি শেয়ারের দাম ছিল এক হাজার ডলারের বেশি। সে তুলনায় এ বছর এখন পর্যন্ত মাইক্রোসফটের শেয়ারমূল্য বেড়েছে মাত্র ১৯ শতাংশ। সাধারণ হিসেবে এ উত্থান সন্তোষজনক হলেও এনভিডিয়ার ঈর্ষণীয় পারফরমেন্সের কাছে তা খুবই ম্লান।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক কোম্পানিটির প্রসেসরের চাহিদা তাদের সরবরাহের ক্ষমতাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে, যেখানে মাইক্রোসফট, মেটা ও গুগলের মতো কোম্পানিগুলো এআই কম্পিউটিং সক্ষমতা বিকাশের প্রতিযোগিতায় বিশাল অর্থ ঢালছে। এনভিডিয়ার শেয়ারমূল্যে এমন নাটকীয় উত্থানে কেবল মঙ্গলবারই তাদের বাজারমূল্যে যোগ হয়েছে ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি।
শীর্ষ ধনীদের কাতারে হুয়াং
কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়ার জেরে ফুলেফেঁপে উঠেছে এনভিডিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহীর সম্পদও। গত কয়েক দিনে রীতিমতো আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন তিনি। গত ১৮ জুন এক দিনেই অন্তত ৪০০ কোটি ডলার সম্পদ বেড়েছে জেনসেন হুয়াংয়ের। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ ৪৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এর ফলে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় আরো এগিয়ে গেছেন এনভিডিয়া সিইও। ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুসারে, তিনি এই মুহূর্তে বিশ্বের ১১তম শীর্ষ ধনী। তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ১১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার।
অথচ ২০১৯ সালে এই তালিকায় ৫৪৬তম ছিলেন জেনসেন হুয়াং। অর্থাৎ, পরের পাঁচ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ১১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি। ২০২৩ সালের শেষে ধনীর তালিকায় ৭৬তম ছিলেন হুয়াং। ওই সময় তার মোট সম্পদ ছিল দুই হাজার ১০০ কোটি ডলারের। এরপর থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে তার সম্পদ। চিপ নির্মাতা কোম্পানি এনভিডিয়ার ৩ দশমিক ৫ শতাংশ শেয়ার থেকেই বেশির ভাগ সম্পদ অর্জন করেছেন ৬১ বছর বয়সী এ ব্যবসায়ী।
১৯৯৩ সালে ক্রিস মালাচোস্কি এবং কার্টিস প্রিমের সাথে এনভিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রিধারী জেনসেন হুয়াং। শুরু থেকেই তিনি কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা